চকরিয়া চিংড়িজোন খ্যাত চিরিঙ্গা ইউনিয়নের সওদারঘোণা ও চরণদ্বীপ এলাকায় একদল ডাকাতের হাতে জিম্মি হয়ে পড়েছেন শতশত ঘের মালিক ও চাষিরা। ঘেরে ডাকাতি ও লুটপাট ওইসব ডাকাতদলের নিত্যব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাদের ভয়ে ঘের মালিক ও চাষিরা মুখ খুলছে না। ওই এলাকায় র্যাব-পুলিশ একাধিকবার অভিযান চালানো হয়েছে।
চিংড়ি চাষিরা জানান, উপজেলার চিরিংগা ইউনিয়নের সওদাগরঘোণা ও চরণদ্বীপ এলাকায় হাজার হাজার একর চিংড়িঘের রয়েছে। শতশত চিংড়ি চাষি মৎস্য চাষ করে জীবিকা নির্বাহ করে আসছেন। সেখানে চিংড়ি সহ বিভিন্ন জাতের মৎস্য চাষ করে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করছেন। এতে লাভবান হচ্ছেন দেশ এবং হাজার হাজার মৎস্য চাষিরা। কিন্তু কোটি কোটি টাকা আয় করলেও চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভোগছেন সেখানকার মৎস্য চাষিরা। প্রতিনিয়ত চিংড়িঘেরে ডাকাতি ও লুটপাট চালাচ্ছে একদল ডাকাত। প্রতিজোতে ঘেরের মাছ লুটে নিয়ে যাচ্ছে ডাকাতদল। এমন কী চিংড়িঘেরে পালিত গবাদী পশু চুরি করে নিয়ে যাচ্ছে ওই ডাকাতদল।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক চাষি বলেন, চিরিঙ্গা ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের সওদাগরঘোণা এলাকার মৃত জহির আহমদের পুত্র নুরুল আমিন প্রকাশ আমিন ডাকাতের নেতৃত্বে গড়ে উঠছে ২০-২৫জনের একটি বাহিনী। ওই বাহিনীর নেতৃত্বে প্রতিনিয়ত বদরখালী, রামপুর, মহেশখালী চ্যানেল, ডুলাহাজারা, খুটাখালী ও উপকুলীয় এলাকায় চিংড়িজোনে ডাকাতি ও লুটপাট করছেন। তারা উৎপাদিত মাছ গুলো লুট করে নিয়ে যাচ্ছে। প্রতিবাদ করলে মারধর ও হামলা করছেন ডাকাতদল। তাদের অত্যাচারে অসহায় হয়ে পড়েছেন ওই এলাকার শতশত চিংড়ি চাষি। বাহিনী প্রধান আমিনের বিরুদ্ধে হত্যা, ডাকাতি, লুটপাট ও গুমের মতো অপরাধের চকরিয়া থানায় প্রায় ১৫টি মামলা রয়েছে। র্যাব ও পুলিশ তাকে ধরার জন্য হন্য হয়ে উঠেছে। কিন্তু সম্প্রতি র্যাব-৭ ও পুলিশ অভিযান চালিয়ে তাকে ধরতে পারেনি। তবে ওই বাহিনীর আস্তানা থেকে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র উদ্ধার করেছিলো র্যাব। তার সহযোগী সওদাগর ঘোণা এলাকার মোঃ লেদুর পুত্র নুরুল আমিন প্রকাশ কালাইয়্যা, সোলেমানের পুত্র পেটু, গোলালুর রহমানের পুত্র নবীর হোসেন এসব চিহ্নিত ডাকাতদের বিরুদ্ধে থানা ও আদালতে একাধিক মামলা রয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে চকরিয়া থানা ও আদালতের গ্রেফতারী পরোয়ানা রয়েছে।
এদিকে চিরিঙ্গা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব জসিমউদ্দিন বলেন, ডাকাত আমিন্যা চিংড়িজোনে ডাকাতি ও লুটপাট করছেন মাছ সহ বিভিন্ন মালামাল। তার বাহিনীর ব্যাপারে একাধিকবার র্যাব ও পুলিশ বাহিনীকে বলা হয়েছে এবং উপজেলা পরিষদে আইনশৃঙ্খলা বৈঠকে তাকে গ্রেফতারের জন্য বলা হয়েছে। তার বাহিনীর অত্যাচারে কোন ঘের মালিক মাছ চাষ করতে পারছে না। তার বাহিনী প্রতিনিয়ত ডাকাতি ও লুটপাট করছেন বলে জানান তিনি।
চকরিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (তদন্ত) মো: কামরুল আজম বলেন, এসব ডাকাতদের ধরতে একাধিকবার অভিযান চালানো হয়েছে। তাদেরকে অবশ্যই আইনের আওতায় আনা হবে।
পাঠকের মতামত: