প্রতিদিনের মত বউয়ের ঘ্যানঘ্যানানিতে ঘুম ভাঙ্গল কেরামত আলীর। বাসার চালের ভাঙ্গা টিনের ফাঁক দিয়ে ভোরের আবছা আলো ঘরে ঢুকছে। বাপের আমলে তৈরী করা ঘরটা তেমন শক্ত নেই। স্হানে স্হানে বেড়া পঁচে গেছে। রান্নাঘরের অবস্হা সবচেয়ে করুন। গতকালও রান্নাঘরের ভাঙ্গা বেড়া গলে কুকুর ঢুকে ভাত তরকারী খেয়ে গেছে। রাতে কাজ থেকে এসে ভাত না পেয়ে বউয়ের সাথে ঝগড়া হয়েছে খুব একচোট। পরে আবার নতুন করে রান্না চড়িয়ে অনেক রাতে ভাত খেতে দিয়েছে তার বউ। বাসাটা মেরামত করার জন্য বউয়ের প্যানপ্যানানি শুনতে হয় প্রতিদিন। কিন্তু সীমিত আয় দিয়ে প্রতিদিনের ডালভাত যোগাড় করতেই অবস্হা টাইট, বাসা মেরামতের টাকা পাবে কোত্থেকে? গত বর্ষায়ও জীর্ণ টিন গলে বাসায় পানি পড়েছে, তিন চার মাস অনেক কষ্ট পেয়েছে তারা। প্রাইমারী স্কুল পড়ুয়া ছেলে মেয়ে দুটির ভাল একটা কাপড় নেই। গত ঈদের আগের ঈদে বউকে একটা শাড়ী কিনে দিয়েছিল, সেটাও এখন পুরনো হয়ে গেছে। তার নিজেরও ভাল শার্ট-লুঙ্গী নেই। এতগুলো অভাবকে সামাল দিয়ে কোনরকমে বাসাটা মেরামত করার কম চেষ্টা করেনি সীমিত আয়ের কেরামত। কিন্তু সাধ ও সাধ্যের সমন্বয় ঘটাতে না পারায় ভাঙ্গা বাসাতেই কোনরকমে মাথা গুজে দিনপার করছে সে। এ নিয়ে প্রতিদিন বউয়ের খোঁটা শুনতে হয়। বেলা বাড়লে উঠে তাড়াডাড়ি মুখহাত ধুয়ে বাজার করতে বের হল সে। বাজারে যাওয়ার সময় দেখে ফুলের দোকানগুলোতে উপচে পড়া ভীড়। তরুণ তরুণীরাই লাইন ধরে ফুল কিনছে বেশী। বৃদ্ধ ও মধ্যবয়সী কয়েটা দম্পতিকেও ফুল কিনতে দেখা গেল। পাশ দিয়ে চলে যাওয়া কয়েকটা রিক্সায় ঘনিষ্ট হয়ে বসা যুগলদের হাতেও ফুলের বিশাল তোড়া দেখে আশ্চর্য হল কেরামত আলী। চলন্ত রিক্সার হুুড তুলে দিয়ে হাতে ফুল নিয়ে গুজুর গুজুর- ফিসফাস করা জুটি আজ বেশী দেখা যাচ্ছে। আজ সবার হাতে ফুল কেন? বাজার করে বাসায় ফিরার সময় পাশের বাসার কলেজ পড়ুয়া আফজালের সাথে দেখা। আফজাল বলল, আজ ১৪ ফেব্রুয়ারী, আজ নাকি “বিশ্ব ভালোবাসা দিবস”। ফুল ছাড়া তো আর ভালবাসা প্রকাশ করা যায়না, তাই সবাই ফুল কিনছে। বিকালে সমুদ্র সৈকতে নাকি পা ফেলাই দায় হবে। সবাই ভালোবাসা বিনিময় করবে, ফুল দেবে- নেবে, এলাহি কান্ড। বছরের অন্যান্য দিনও ভালোবাসা প্রকাশ করা যায়, তবে আজ নাকি ভালোবাসার তেজ বেশী, বৈশাখ মাসের রোদের মত। তাই পথেঘাটে, নালা নর্দমায় পর্যন্ত ভালোবাসা বিক্রির হাট বসেছে!! শুনে মনটাই খারাপ হয়ে গেল কেরামত আলীর। অভাবের তাড়নায় নিজের “ভাঙ্গা বাসা” টা মেরামত করে “ভাল বাসা”য় পরিণত করতে পারছেনা সে। আর এরা ভালোবাসার নামে এত কান্ড করছে! ভাল একটা বাসা না থাকায় তার মত অনেকে ভাঙ্গা বাসায় দিন কাটাচ্ছে, বর্ষায় ভিজছে, শীতে কাঁপছে। ভালোবাসার চেয়ে তার কাছে “ভালবাসা” অর্থাৎ ভাল একটা বাসা বেশী দরকার। বিশ্ব ভালোবাসা দিবস পালন না করে “ভালবাসা” দিবস পালন করলে কি এমন ক্ষতি হত? ভালোবাসার দিবসের পরিবর্তে “ভাল বাসা” অর্থাৎ ভাল বাসস্হান দিবস, এটাই তাদের জন্য ভাল হত, উপলদ্ধি করে কেরামত আলী। অন্ন-বস্ত্র-বাসস্হান, মানুষের এ তিন মৌলিক অধিকারের অন্যতম “ভাল বাসা” দিবসের কখন প্রচলন হবে এ প্রহর গুনছে কেরামত আলী, যে দিনটা গরীবরাও পালন করতে পারবে।
প্রকাশ:
২০১৬-০২-১৪ ০৮:২৩:০০
আপডেট:২০১৬-০২-১৪ ০৮:২৩:০০
- চকরিয়ায় বিএনপি নেতাকে কুপিয়ে হত্যা চেষ্টার অভিযোগ
- ইসলামের বৃহৎ স্বার্থে চকরিয়া জামায়াতে ইসলামীর সাথে একটেবিলে বসতে চায়
- চকরিয়ায় চিংড়িঘের দখল নিয়ে দু-গ্রুপে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ ১, অস্ত্রসহ ৪ সন্ত্রাসী আটক
- চকরিয়ায় পৌরশহরের তিনটি আবাসিক হোটেল ও চারটি রেস্টুরেন্টে অভিযান
- কিশলয় শিক্ষা নিকেতন স্কুলে বিলুপ্ত কমিটির স্বাক্ষর নিয়ে বিল ভাউচার করার অভিযোগ
- শীতের কম্বল দিতে বেড়িয়ে পড়েন চকরিয়ার মানবিক ইউএনও আতিকুর রহমান
- চকরিয়ায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দুই পক্ষের সংঘর্ষে ইউপি মেম্বারসহ আহত ৪
- কক্সবাজার সিটি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আকতার চৌধুরী
- পেকুয়ায় রব্বত আলী পাড়া সড়কে গাড়ি চলে না ২০ বছর!
- চকরিয়ায় বাস চাপায় বৃদ্ধ নিহত
- চকরিয়ায় সংঘবদ্ধ ধর্ষণরর মামলার অন্যতম আসামি ফারুককে গ্রেফতার করেছে র্যাব
- চকরিয়ায় সংঘবদ্ধ কিশোরী ধর্ষণকাণ্ডে ৭ জন গ্রেফতার, ৩ জন জেলহাজতে
- জমজম হাসপাতালে ডাক্তারের ভুল চিকিৎসায় নবজাতকের মৃত্যু ডাক্তারের বক্তব্য
- খুটাখালীতে শতাধিক পরিবারে শীতবস্ত্র বিতরণ
- সঙ্গী হাতির আক্রমণে কৃষক নিহত চকরিয়ায়
- পেকুয়ায় রব্বত আলী পাড়া সড়কে গাড়ি চলে না ২০ বছর!
- নাইক্ষ্যংছড়িতে হতদরিদ্রদের মাঝে বিজিবির শীতবস্ত্র বিতরণ
- কক্সবাজার সিটি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আকতার চৌধুরী
- শীতের কম্বল দিতে বেড়িয়ে পড়েন চকরিয়ার মানবিক ইউএনও আতিকুর রহমান
- চকরিয়ায় পৌরশহরের তিনটি আবাসিক হোটেল ও চারটি রেস্টুরেন্টে অভিযান
- চকরিয়ায় রেল স্টেশন মাস্টারকে ছুরিকাঘাত করেছে দুবৃর্ত্তরা
- চকরিয়ায় মৎস্য অধিদপ্তরের উদোগে নৌযান মালিক ও সারেং দের নিয়ে কর্মশালা
পাঠকের মতামত: