ঢাকা,সোমবার, ১৪ অক্টোবর ২০২৪

“কক্সবাজার জেলা আ’লীগে ভোট বঞ্চিত তৃণমূলের নেতাকর্মীরা হতাশ”

12565636_643468185791686_8230915729861755309_n-300x169নিজস্ব প্রতিবেদক ::

কক্সবাজার জেলা আ’লীগের ত্রি-বার্ষিক কাউন্সিল ও সম্মেলন গত কাল রোববার সম্পন্ন হয়েছে। দীর্ঘ ১৩ বছর পর সম্পূর্ণ গণতান্ত্রিক পন্থায় আগামী দিনের কান্ডারী নির্বাচিত করার জন্য জেলার ১১টি ইউনিটের কাউন্সিলর তথা নেতাকর্মীরা ছিল উজ্জীবিত। সম্মেলণকে সফল ও সার্থক করতে আসছেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রিয় প্রেসিডিয়াম সদস্য, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশারফ হোসেন ও মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীসহ ১১ কেন্দ্রিয় নেতা। কিন্তু জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে আসা কাউন্সিলররা তাদের মতামত ব্যক্ত করতে পারেনি বলে তারা হতাশ। যথারীতি দুপুরে কাউন্সিলের প্রথম অধিবেশনের সমাপ্তির পর সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম মাইকে ঘোষণা দেন নেতাদের সাথে সার্কিট হাউসে বৈঠক হবে কেন্দ্রীয় নেতাদের। ওই সময় ভোট দেয়ার জন্য কাউন্সিলরদের সৈকতস্থ বিয়াম ল্যাবরেটরীতে উপস্থিত হওয়ার ঘোষণা দিলে তৃণমূল কর্মীরা যথারীতি বিয়ামে উপস্থিত হন। ঠিক সেই মুহুর্তে সার্কিট হাউসে ঘোষণা দেন সভাপতি হিসাবে এড. সিরাজুল মোস্তফা ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে মুজিবুর রহমান চেয়ারম্যানকে। এ খবরটি পুরো শহরে তৃণমূলের আওয়ামীলীগ নেতাদের কাছে পৌঁছা মাত্রই শুরু হয় বিরূপ প্রতিক্রিয়া।
সম্মেলণে উপস্থিত ছিলেন, কেন্দ্রিয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল-আলম হানিফ, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রিয় সাংগঠনিক সম্পাদক বীর বাহার উ শৈ সিং, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক, পরিবেশ ও বন প্রতিমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক, বিজ্ঞান প্রযুক্তি মন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান, শ্রম ও জনশক্তি বিষয়ক সম্পাদক হাবিবুর রহমান সিরাজ, স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদক ডাঃ বদিউজ্জামান ভুঁইয়া ডাবলু, কেন্দ্রিয় সদস্য মির্জা আজম এমপি, সুজিত রায় নন্দী ও আমিনুল ইসলাম আমিন।
জেলা আওয়ামীলীগের দু’জনের কমিটি ঘোষণা করেই কাউন্সিল যে মুহুর্তে শুরু হওয়ার কথা ছিল সেই মুহুর্তে বিকালে বিমান যোগে কক্সবাজার ত্যাগ করবেন সম্মেলনের প্রধান অতিথি সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম সহ অন্যান্য কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগের নেতারা।
তৃণমূলের নেতা কর্মীরা আক্ষেপের সাথে বলেন, সম্পূর্ণ গণতান্ত্রিক পন্থায় ভোট হলে তারা তাদের পছন্দের ও ক্লিন ইমেজের নেতা নির্বাচন করতে পারতো। কিন্তু সেই অধিকার থেকে বঞ্চিত হয়েছেন তারা।
তৃণমূলের কাউন্সিলররা আরো বলেন, সভাপতি পদে ছয় জন ও সাধারণ সম্পাদক পদে সাত জন প্রতিদ্বন্ধিতা করে আসছিল। সেই মতে কাউন্সিল ও সম্মেলনের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করে জেলা আওয়ামীলীগ। গত কয়েকদিন ধরে প্রতিদ্বন্ধিতাকারীরা স্ব-স্ব অবস্থানে থেকে তৃণমূলের কাউন্সিলরদের আস্থা ও বিশ্বাস অর্জনের জন্য যোগাযোগ রক্ষা করে। সম্মেলনকে ঘিরে প্রার্থী কিংবা নেতাকর্মীদের মধ্যে কোন ধরনের বিশৃঙ্খলা কিংবা কোন ধরনের টুশব্দও হয়নি। সম্মেলন নিয়ে পুরো জেলায় বিরাজ করছিল উৎসব আর আমেজ। রাজনৈতিক অঙ্গনে বিরাজ করছিল পিনপতন নিরবতা। কিন্তু ভোট দিতে না পারায় তাদের সেই আশা ভেঙ্গে গেছে। ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন তারা।
ভোট বঞ্চিত তৃণমূল নেতাকর্মীরা জানান, তারা দীর্ঘদিন নেতৃত্ব দেখেছেন। অনেকে হয়েছেন নেতাদের রাজনৈতিক কোন্দলের বলি। বিভিন্ন ভাবে হয়রানিও হয়েছেন তারা। নেতারা অনেকে পাশে দাঁড়াননি তাদের। এজন্য কারও দ্বারা ব্যবহৃত না হয়ে নতুন মুখের স্বপ্নও দেখছিলেন। কিন্তু কাউন্সিল না করে কমিটি ঘোষণা করায় স্বপ্ন ভেঙ্গেছে তৃণমূলের।
তারা বলেন, রোববারের সম্মেলন ও কাউন্সিলের তৃণমূলের নেতাকর্মীরা তাদের পছন্দের নেতা নির্বাচন করতে পারেন নি। যদি গণতান্ত্রিক পন্থায় ভোট হত তাহলে জাতীর জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঘনিষ্ঠ সহচর ও মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক মরহুম মোজাম্মেল হক এর ছেলে মাসেদুল হক (রাসেদ) সাধারণ সম্পাদক হিসাবে বিপুল ভোটে জয়ী হতেন এমনটাই আশা ছিল তাদের। কিন্তু সেটা হয়নি। কেন্দ্রীয় হাই কমান্ড চাইলে নেতৃত্ব পছন্দ করে দিতে পারেন। সে ক্ষমতা তার রয়েছে। তবে তারা চেয়েছিলেন, গনতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় কাউন্সিলর ভোটেই নতুন কমিটি করা হলে ভালো হতো।

 

পাঠকের মতামত: