কক্সবাজার প্রতিনিধি :
তথ্যপ্রযুক্তি খাতের বিকাশ ও ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নকে এগিয়ে নিতে কক্সবাজারের রামুতে প্রায় ৯ একর জায়গা জুড়ে দেড়’শ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হতে যাচ্ছে ডিজিটাল সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক এ তথ্য জানিয়েছেন। গতকাল বিকাল ৪ টায় কক্সবাজার বিয়াম মিলনায়তনের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের অধীনে বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের (বিসিসি) লিভারেজিং ফর গ্রোথ, এমপ্লয়মেন্ট অ্যান্ড (এলআইসিটি) প্রকল্প আয়োজিত আইসিটি ক্যারিয়ার ক্যাম্প’ ২০১৬ এর উদ্ধোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ তথ্য জানান তিনি।
তিনি বলেন “ডিজিটাল সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক নির্মানের জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে আমরা জায়গা পেয়ে গেছি। দলিল হস্তান্তরও হয়ে গেছে। অল্প কিছুদিনের মধ্যেই কাজ শুরু হয়ে যাবে। তাছাড়া কক্সবাজারের ট্যুরিজমের উন্নয়নে এ পার্ক বিশেষ ভূমিকা পালন করবে। সারা বিশ্বের কাছে কক্সবাজারকে পরিচিত করাতেও এ প্রযুক্তি বিশেষভাবে সহযোগীতা করবে। তাছাড়া দেশের মোট সংখ্যার ৫৬ শতাংশই তরুন ও যুবা, যাদের বয়স ৩০ এর নীচে । এসব তরুন- তরুনীদের মধ্যে যারা শিক্ষিত তাদের উল্লেখযোগ্য অংশকে আইটিতে প্রশিক্ষনের জন্য বিভিন্ন প্রকল্প ও কর্মসূচির বাস্তবায়ন করছে সরকার। এর লক্ষে ২০২১ সালের মধ্যে দেশে আইটি পেশাজীবির সংখ্যা ২০ লাখে উন্নীত করা। এ পার্ক চালু হলে প্রায় দেড় হাজার শিক্ষিত বেকারের চাকুরীর সুযোগ সৃষ্টি হবে।”
প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, আউটসোর্সিংয়ে বাংলাদেশের অবস্থান বিশ্বে তৃতীয়। তথ্য ও প্রযুক্তি বিভাগের আর্নিং প্রকল্পের অধীনে আউটসোর্সিংয়ের প্রশিক্ষণ দিয়ে ৫৫ হাজার ফ্রিল্যান্স তৈরী করা হচ্ছে। মানসম্মত প্রশিক্ষণ নিশ্চিত করার জন্য তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলে বিশোয়িত ল্যাব স্থাপন করা হয়েছে। তিনি আরো বলেন, তথ্য প্রযুক্তিখাতের বিকাশ ও ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নকে এগিয়ে নিতে আইসিটি অবকাঠামো উন্নয়নসহ ব্যাপক কার্যক্রম গ্রহন করেছে সরকার। যশোরে শেখ হাসিনা সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক নির্মাণ কাজ প্রায় সমাপ্তির পথে। কালিয়াকৈরে ৩৩২ একর জমির উপর বঙ্গবন্ধু হাইটেক পার্ক নির্মাণের কাজ দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলেছে। এ দুইটি পার্কসহ দেশে ১২টি আইটি পার্ক গড়ে তোলা হচ্ছে। শুধুমাত্র কালিয়াকৈরে বঙ্গবন্ধু হাইটেক পার্ক নির্মাণের কাজ শেষ হলে লক্ষাধীক লোকের কর্মসংস্থান হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের তরুণ-তরুণীদের আইটিতে ক্যারিয়ার গড়া এবং প্রশিক্ষণ নিয়ে নিজেদের দক্ষ করে গড়ে তোলার আহবান জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, বিগত সাড়ে ৩ বছরে ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নে অগ্রগতি সাধিত হওয়া তথ্য প্রযুক্তিখাতে বিরাট সম্ভবনা তৈরী করেছে। এ সম্ভবনাকে কাজে লাগিয়ে আপনাদেরই এগিয়ে আসতে। ক্যারিয়ার ক্যাম্পে কক্সবাজার সরকারি কলেজ, সরকারি মহিলা কলেজ ও কক্সবাজার ইন্টার ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ¯œাতক ও ¯œাতোকোত্তর শিক্ষার্থীরা অংশ গ্রহন করে।
সভাপতির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক মোঃ আলী হোসেন বলেন “কক্সবাজারে আইটি খাতে উন্নতি হলে পর্যটন খাতে সুযোগ সৃষ্টি হবে। যা দেশের অর্থনীতিতে সুফল বয়ে আনবে। কক্সবাজারে মানুষের জন্য কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হবে। কক্সবাজারের উন্নয়নে সরকারের বিশেষ সুনজর রয়েছে। আশা করছি খুব তাড়াতাড়ি এর সুফল আমরা পাবো। ”
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কক্সবাজার- রামু আসনের সংসদ সদস্য সাইমুম সরোয়ার কমল। তিনি বলেন “প্রযুক্তি অনেকদূর এগিয়ে গেছে। আশা করছি প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে কক্সবাজারের ছেলেমেয়েরা বিশ্ব দরবারে মাথা উচু করে দাঁড়াতে পারবে। তাদের মোধা আর শ্রমের মাধ্যমে তারা দেশের মুখ উজ্জ্বল করবে।”
বক্তব্য রাখেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এডভোকেট সিরাজুল মোস্তফা, ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির উপাচার্য প্রফেসর ড. আবুল কাশেম, কক্সবাজার সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ একেএম ফজলুল করিম চৌধুরী, লিভারেজিং আইসিটি ফর গ্রোথ, এমপ্লয়মেন্ট অ্যান্ড গভর্নেন্স প্রকল্প পরিচালক মোঃ রেজাউল করিম। পাওয়ার পয়েন্ট উপস্থাপন করেন এলআইসিটি প্রকল্পের কম্পোনেন্ট টীম লিডার সামি আহমেদ। কোরান তেলাওয়াত করেন হাফেজ হেলাল উদ্দিন ফোরকান। গীতা পাঠ করেন মৃদুল কান্তি মল্লিক। এসময় উপস্থিত ছিলেন কক্সবাজার সরকারি কলেজ, কক্সবাজার মহিলা কলেজ, ইন্টান্যাশনাল ইউনিভার্সিটিসহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা।
কক্সবাজারে দেড়শ’ কোটি টাকা ব্যয়ে রামুতে নির্মিত হবে ডিজিটাল সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক -প্রতিমন্ত্রী

পাঠকের মতামত: