ঢাকা,বৃহস্পতিবার, ১০ অক্টোবর ২০২৪

উৎপাদন মৌসুমে আমদানী ঃ কক্সবাজারের লবণ শিল্পকে ধ্বংসের ষড়যন্ত্র

আতিকুর রহমান মানিক, কক্সবাজার :::

কক্সবাজারের লবণ শিল্পকে ধ্বংসের পায়তারায় আবারো মাঠে নেমেছে নারায়নগঞ্জের কুখ্যাত পরিতোষ সাহা সিন্ডিকেট। লবণ উৎপাদনের ভরা মৌসুমে অনুমোদন বিহীনভাবে ভারত থেকে অপরিশোধিত লবণ আমদানী করে বিভিন্ন কুট কৌশলে খালাস করার মূহুর্তে চট্টগ্রাম বন্দরে উক্ত চালান আটকে দিয়েছে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। দেশীয় লবণ শিল্পকে রক্ষার জন্য সরকার লবণ আমদানী বন্ধ ঘোষনা করলেও অনুমোদন বিহীনভাবে পরিতোষ সাহার মালিকানাধীন নারায়ণগঞ্জের পূবালী সল্ট ইন্ডাষ্ট্রিজ (ইউনিট-২) নামের প্রতিষ্ঠান তাদের চট্টগ্রামস্থ ফ্যাক্টরির জন্য ২ হাজার ২২২টন লবণ আমদানি করে। সূত্র জানায়, ভারত থেকে আনা লবণ বোঝাই মাদার ভ্যাসেলটি গত ২৬ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙরে পৌঁছে। মাদার ভ্যাসেলটি বহির্নোঙরে আসার পর থেকে আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান লবণ খালাসের অনুমোদনের জন্য নানা ভাবে চেষ্টা করে। অবশেষে আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে গত ১ নভেম্বর কাস্টমস এ্যাক্ট, ১৯৬৯ এর ৭৮ ধারার বিধান মোতাবেক এই লবণের শুল্কের সমপরিমাণ টাকা হিসেব করে ৩৬ লাখ ৯৩ হাজার ২৮৮ টাকার পে অর্ডার জমা নিয়ে চট্টগ্রাম কাস্টমস থেকে লবণের চালানটি দু’টি লাইটারেজ জাহাজে সংরক্ষণের অনুমোদন নেয়া হয়। এই অনুমোদনের ভিত্তিতে গত ২ ও ৩ নভেম্বর এমভি খলিল-১ এবং এমভি কালাম এক্সপ্রেস-১ নামের দু’টি লাইটারেজ জাহাজে লবণগুলো খালাস করা হয়। কিন্তু দেশীয় লবণ শিল্পের জন্য ক্ষতিকর দিক চিন্তা করে সংশ্লিষ্ট দপ্তর উক্ত লবন খালাসের বিরোধীতা করে। ফলে পরিতোষ সাহার মালিকানাধীন আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান আমদানি রপ্তানি প্রধান নিয়ন্ত্রকের দপ্তর থেকে প্রয়োজনীয় ছাড়পত্র সংগ্রহ করতে ব্যর্থ হয়। এখন অবৈধ ভাবে আমদানীকৃত উক্ত লবণ যেকোন উপায়ে খালাস করে দেশে বাজারজাত করার জন্য বহুমূখী চেষ্টা করে যাচ্ছে উক্ত সিন্ডিকেট। অবৈধ ভাবে লবণ আমদানীকারক পূবালী সল্ট ইন্ডাস্ট্রিজ (ইউনিট-২) লিমিটেডের পরিচালক বিপুল সাহার সাথে গতকাল যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আসলে পুরো ব্যাপারটি একটি ভুল বুঝাবুঝি থেকে শুরু হয়েছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় প্রথমে আমদানীর অনুমোদন দেয়ায় আমরা লবণ আমদানী করে ছিলাম। কিন্তু বাণিজ্য মন্ত্রণালয় যখন আগের সিদ্ধান্ত স্থগিত করলো তখন আর আমাদের এলসি বাতিল করার সুযোগ ছিল না। দেশের স্বার্থ বিরোধী কাজ করে অন্যায় করেছেন স্বীকার করে তিনি বলেন, আমরা সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় আছি। উলেখ্য, বিদেশ থেকে লবণ আমদানী বন্ধ থাকায় চলতি মৌসুমে মাঠ পর্যায়ে লবণের রেকর্ড দাম পাচ্ছে চাষীরা। বর্তমানে ৪০০/৪৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে প্রতি মন লবণ। এ সুযোগে ভারত থেকে লবণ আমদানী করে গলা কাটা মুনাফা অর্জন ও কক্সবাজারের লবণ শিল্পকে ধ্বংসের মিশন নিয়ে মাঠে নেমেছে নারায়নগঞ্জের উক্ত সিন্ডিকেট। অবৈধ পন্থায় আমদানী করা উক্ত লবণ বাজেয়াপ্ত করার দাবী জানিয়েছেন কক্সবাজারের লবণ চাষী ও মিল মালিকরা।

পাঠকের মতামত: