পেকুয়া উপজেলার উজানটিয়া ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য সাইফুল ইসলামের বিরুদ্ধে স্থানীয় নিরীহদের কাছ থেকে সরকারী ঘর দেয়ার নাম করে হাজার হাজার টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে বলে গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। জানাগেছে অভিযোগ পেয়ে উজানটিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম চৌধুরী ওই মেম্বারকে শাসিয়ে দিয়েছেন। সূত্র জানায়, বর্তমান সরকার “সবার জন্য বাসস্থান” প্রকল্পের আওতায় প্রতিটি ইউনিয়নে সুবিধাভোগীদের ৩ স্তরের একটি তালিকা তৈরী করছেন। এ উপলক্ষে প্রতিটি ইউনিয়নে ৩ জনের একটি আহবায়ক কমিটি গঠন করা হয়েছে। উপজেলা নির্বাহী অফিসারের প্রতিনিধি হিসেবে একজন প্রথম শ্রেণীর অফিসারকে আহবায়ক করে সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যান ও ১ জন স্কুলের প্রধান শিক্ষকে ওই কমিটির সদস্য করা হয়েছে। সরকার যে ৩ টি ক্যাটাগরিতে তালিকা করছে তারমধ্যে প্রথমটি হচ্ছে একেবারে গৃহ এবং ভূমিহীন, দ্বীতিয়টি ক্যাটাগরি হচ্ছে যাদের ঝরাজীর্ণ বাড়ী আছে কিন্তু সংস্কারের সামর্থ নেই তৃতীয়ত যাদের ১০ শতক জমি আছে কিন্তু ঘর করার সামর্থ নেই। সূত্র আরো জানায়, ৩ ক্যাটাগরির তালিকা তৈরীর পর সেটি উপজেলা কমিটি অনুমোদন দিয়ে পাঠাবেন জেলা কমিটি হয়ে সরকারী প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে। তারপরই চুড়ান্ত হবে কারা প্রকৃত সুবিধাভোগী। কিন্তু তালিকা তৈরীর এ সুযোগে ঘর দেয়ার আশ্বাস দিয়ে উজানটিয়া ইউনিয়নের ২ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য সাইফুল ইসলাম ওই ওয়ার্ডের হাডির পাড় এলাকার ৩০ বাড়ী থেকে হাজার হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়েছে বলে অভিযোগ করেছে স্থানীয়রা। ২নং ওয়ার্ডের হাডির পাড়া এলাকার অসহায় আবুল হাসিম, কামাল, সাইট পাড়া এলাকার নুরুল ইসলাম, লেডু, দিলু সহ আরো অনেকে জানান, সরকারী ঘর দেয়ার কথা বলে মেম্বার সাইফুল ইসলাম আমাদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে গেছে। বলেছে টাকা না দিলে ঘর পাওয়া যাবেনা। তারা জানান, আমরা গরীব মানুষ একটি ঘর পেলে মাথা গুজার ঠাই হবে সে আশায় মেম্বারকে টাকা দিয়েছি। পরে শুনছি সরকার ঘরগুলো গরীব মানুষদের জন্য এমনিতেই দিবে; এজন্য কোন টাকা লাগবেনা। এ বিষয়ে ইউনিয়ন পরিষদের গ্রামপুলিশ কামাল ও জসিম জানান, গতকাল কিছু লোক এসে চেয়ারম্যানের কাছে ২নং ওয়ার্ডের মেম্বারের বিরুদ্ধে টাকা নেয়ার অভিযোগ দিতে শুনেছি। এসময় উপজেলার একজন অফিসারও ছিল বলে জানান তারা। এ বিষয়ে উজানটিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শহীদুল ইসলামের সাথে যোগাযোগের চেষ্ঠা করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি। এ বিষয়ে ওই ইউনিয়নে গঠিত কমিটির আহবায়ক ও উপজেলা সমবায় অফিসার ওসমান গণির সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বিষয়টির সত্যতা স্বীকার করে বলেন, একজন সুবিধাভোগী আমাদেরকে ওই মেম্বারের বিরুদ্ধে টাক নেয়ার অভিযোগ করেছেন। বিষয়টি সত্যতা যাঁচাই করার জন্য চেয়ারম্যানকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে বলে জানান তিনি। এ বিষয়ে অভিযুক্ত ইউপি সদস্য সাইফুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, কই আমিতো কোন টাকা পয়সা চাইনি যাদের নাম তালিকায় এসেছে তাদের ছবি আইডি কার্ড সবকিছু পেকুয়া থেকে ছাপিয়ে এনে ইউনিয়ন পরিষদের জমা দিতে জনপ্রতি দুই চারশত টাকা খরচ হয় আমি সেগুলো দিতে বলেছি। এতে অভিযোগ করার কি আছে? তিনি হুমকি দিয়ে বলেন, যে অভিযোগ করেছে তার নামটা দেন আমি তাকে দেখে নেব।
এদিকে অভিযুক্ত ওই ইউপি মেম্বারের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নিয়ে সরকারের দরিদ্র বান্ধব এ প্রকল্পের ভাবমূর্তি রক্ষার দাবি জানিয়েছে উপকারভোগীরা।
পাঠকের মতামত: