উখিয়া সরকারী হাসপাতালে তীব্র ঔষুধ সংকট দেখা দিয়েছে। হাসপাতালের বহি:বিভাগ ও অন্ত:বিভাগে চিকিৎসা নিতে আসা শত শত রোগীরা ঔষুধ না পেয়ে ফেরত যাচ্ছে। এমনকি জরুরী বিভাগেও কোন ধরনের ঔষুধ নেই। এমন একটি জনগুরুত্বপূর্ণ সেবা মূলক প্রতিষ্ঠানে সরকারী ভাবে বরাদ্দকৃত ঔষুধ মারাতœক সংকট দেখা দেওয়ায় চিকিৎসা সেবা ভেঙ্গে পড়েছে।
হাসপাতালে কর্মরত মেডিকেল অফিসার জানান, হাসপাতালে ঔষুধ সরবারহ না থাকায় চিকিৎসা নিতে আসা গরীব অসহায় রোগীদেরকে ঔষুধ দেওয়া যাচ্ছে না। সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, গত ৬ মাস ধরে উখিয়া হাসপাতালের জন্য লক্ষ লক্ষ টাকার বরাদ্দকৃত সরকারী গুরুত্বপূর্ণ জীবন রক্ষাকারী ঔষুধ কেউ নিচ্ছে না। ফলে ঔষুধ গুলো কক্সবাজার সিভিল সার্জন ঔষুধ ভান্ডারে পড়ে রয়েছে।
এ ব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার আব্দুল মাবুদের সাথে মোবাইলে (০১৯৬৯৬৫৫৭৭৩) একাধিক বার যোগাযোগ করার পরও রিসিভ না করায় তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
জানা যায়, উখিয়া সরকারী হাসপাতালে প্রতিদিন দেড় শতাধিক রোগী বহি:বিভাগে চিকিৎসা নিতে আসে। এছাড়াও অন্ত:বিভাগে ৩০/৪০ জন রোগী ভর্তি থাকে। তৎ মধ্যে শিশু নিউমনিয়া, ডায়রিয়া, কলেরা, ম্যালেরিয়া, টাইফয়েডসহ বিভিন্ন বয়েসের মহিলা ও পুরুষ রোগীরা রয়েছে।
ভর্তিকৃত রোগীরা অভিযোগ করে সাংবাদিকদের বলেন, হাসপাতালে কোন ধরনের ঔষুধ দেওয়া হয় না। এমনকি প্যারাসিটামল ও হিস্টাসিন পর্যন্ত পাওয়া যায় না। শুধু মাত্র ডাক্তারগণ ঔষুধ গুলো সাদা কাগজে লিখে দেয়। উক্ত ঔষুধ গুলো বাহিরের ফার্মেসি থেকে ক্রয় করে এনে আমাদের চিকিৎসা নিতে হয়। বিশেষ করে শিশুদের স্যালাইন ও ইনজেকশন না থাকায় অনেক শিশু রোগী অকালে প্রাণ গেছে।
নাগরিক সমাজের নেতৃবৃন্দরা উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছেন, উপজেলা সদরে এক মাত্র সরকারী হাসপাতালে ৬ মাস ধরে জরুরী ঔষুধ সংকট থাকা খুবই দু:খ জনক। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার খামখেয়ালি পনা ও দায়িত্বহীনতা কারণে হাসপাতালের করুন অবস্থা হয়েছে বলে নেতৃবৃন্দরা অভিযোগ করেন।
নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে, গত ২ মাস পূর্বে উখিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো: মাঈন উদ্দিন হাসপাতালে ঝটিকা অভিযান চালিয়ে স্টোর রুম থেকে মেয়াদ উর্ত্তীণ হওয়া লক্ষ টাকার অধিক ঔষুধের সন্ধান পাওয়ায় সবাই হতভাগ হয়েছিল। সুশীল সমাজের মতে সরকার প্রতি মাসে লক্ষ লক্ষ টাকার জীবন রক্ষাকারী ঔষুধ গরীব রোগীদের জন্য বরাদ্দ দেওয়া হলেও তা রোগীদের না দিয়ে ফেলে রাখায় এসব ঔষুধের মেয়াদ চলে যায়।
হাসপাতালে কর্তব্য রত নার্সরা জানান, হাসপাতাল থেকে ঔষুধ সরবরাহ না করলে আমরা রোগীদের ঔষুধ দিতে পারি না। তাই বাধ্য হয়ে অসহায় রোগীরা বাহিরের ফার্মেসি থেকে ঔষুধ ক্রয় করে আনে।
সচেতন মহলের প্রশ্ন ৬ মাস ধরে কেন উখিয়া হাসপাতালে ঔষুধ সংকট ও কক্সবাজার সিভিল সার্জন কার্যালয়ের অফিস ভান্ডার থেকে বরাদ্দকৃত সরকারী ঔষুধ উখিয়া হাসপাতালে আনা হচ্ছে না বিষয়টি খুবই উদ্বেগ জনক। জনস্বার্থে উক্ত ঘটনাটি উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত করার জন্য সিভিল সার্জনের নিকট জোরদাবী জানিয়েছেন এলাকাবাসীরা।
###################
উখিয়ায় স্কুল ছাত্রী অপহরণ নিয়ে পরস্পর বিরোধী অভিযোগ, আটক ২
ফারুক আহমদ, উখিয়া ॥
উখিয়ার ভালুকিয়াপালং উচ্চ বিদ্যালয়ের ১০ম শ্রেণী ছাত্রী নাজমা নাসরিন অপহরণ ঘটনা নিয়ে পরস্পর বিরোধী অভিযোগ পাওয়া গেছে। মেয়ের পরিবারের দাবী আমার স্কুল পড়–য়া ছাত্রীকে জোরপূর্বক অপহরণ করা হয়েছে। অপর দিকে অভিযোগ উঠেছে প্রেমের সম্পর্ক করে একই এলাকার ছৈয়দ আলমের পুত্র ছাবেরকে বিবাহ করেছে। পুলিশ এ ঘটনায় আবছার মিয়া ও রশিদ মিয়া নামক দু’ব্যক্তিকে আটক করেছে।
গ্রামবাসীর সাথে কথা বলে জানা যায়, উখিয়া উপজেলার হলদিয়াপালং ইউনিয়নের দক্ষিণ ঘাটি পাড়া গ্রামের সৌদি প্রবাসী সাইফুল ইসলামের স্কুল পড়–য়া কন্যা নাজমা নাসরিন ও একই এলাকার ছৈয়দ আলমের পুত্র ছাবেরের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে প্রেমের সম্পর্ক ছিল। উভয় পরিবার তাদের সম্পর্ক মেনে না নেওয়ায় গত ১২ মে দু’জনই পালিয়ে বিয়ে করে। এদিকে মেয়েকে অপহরণ করা হয়েছে মর্মে মা ফিরোজা বেগম বাদী হয়ে কক্সবাজার আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন। যার নং- সি,পি ৬৭৮ তারিখ ২২-০৫-২০১৬ইং।
ছেলের পিতা ছৈয়দ আলম সাংবাদিকদের জানান, নাজমাকে অপহরণ করা হয়নি। স্ব- ইচ্ছায় কাবিন নামা সম্পাদন করে তারা বিবাহ করেছে। ছেলে ছাবের ও আমার পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের কে হয়রানী করার কু-উদ্দেশ্যে আমাদের বিরুদ্ধে এ মামলাটি দায়ের করা হয়।
এদিকে স্কুল ছাত্রী নাজমা নাসরিন ও ছাবের স্বামী স্ত্রী হিসাবে ঘর সংসার করলেও মেয়ের পরিবারে মামলা ও ছেলের পরিবারকে হয়রানীর অভিযোগ নিয়ে এলাকায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে।
পাঠকের মতামত: