ঢাকা,বৃহস্পতিবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৪

ঈদগাঁও’র ৮টি ইটভাটিতে পুড়ছে কাঠ ধ্বংস হচ্ছে বনজসম্পদ, নির্বিকার প্রশাসন

brick_fieldbrনুরুল আমিন হেলালী, কক্সবাজার :::

কক্সবাজার সদর উপজেলার ঈদগাঁওয়ের সবকটি ইটভাটিতে হরদম পুড়ছে বনের কাঠ ধ্বংস হচ্ছে পরিবেশ। কক্সবাজার উত্তর বন বিভাগের ঈদগ্ড় ও ঈদগাঁও রেঞ্জের আওতাধীন বিভিন্ন বনাঞ্চল থেকে এক শ্রেণির কাঠ পাচারকারী সিন্ডিকেট বিভিন্ন প্রজাতির গাছ কেটে দিনে ও রাতে ইটভাটিতে পাচার করছে।

প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায়, ঈদগড় ও ঈদগাঁও এলাকার অবৈধ কাঠ পাচারের সদস্যরা প্রতিনিয়ত সামাজিক বনায়ন থেকে মূল্যবান গামারি, আকাশমণি ও গর্জন গাছ কেটে পার্শ্ববর্তী ঈদগাঁও বাজারের অবৈধ স’মিলে নিয়ে চিরাই করে এক শ্রেনির অসাধু এবং পরিবেশ বিধ্বংসী বন কর্তাদের ম্যানেজ করে বিভিন্ন জায়গায় পাচার করছে। কাঞ্চনমালা সড়ক, ঈদগড়-ঈদগাঁও সড়ক এবং ঈদগাঁও কালির ছড়া বিট অফিসের পার্শ্ববর্তী হামির পাড়ার রাস্তা দিয়ে বেশির ভাগ কাঠ ঈদগাঁও এর বিভিন্ন স,মিল ও ইটভাটায় পাচার হয় বলে জানান স্থানীয়রা। তবে আশ্চর্যের ব্যপার হচ্ছে প্রতিনিয়ত সংঘবদ্ধ গাছ খেকোরা সামাজিক বনায়নের গাছ কেটে সাবাড় করে দিলেও নির্বিকার বনরক্ষকরা। বর্তমান বিভাগীয় বন কর্মকর্তা দায়িত্ব নেওয়ার পর কিছুদিন কাঠ পাচার বন্ধ থাকলেও বর্তমানে প্রতিদিন ভোর রাতে ভোমরিয়াঘোনা অফিস সংলগ্ন বাঁশকল দিয়ে এবং কালিরছড়া বিট অফিসের আওতাধীন ধলিরছড়া হামিরপাড়ার রাস্তা দিয়ে এবং কাঞ্চনমালা সড়ক দিয়ে কাঠ পাচার অব্যাহত রয়েছে। খোঁজ নিয়ে গেছে, জালালাবাদের জনবসতি এলাকায় টিকে ব্রিক্স ও জেডএমবি ব্রিক্স, ইসলামাবাদে তাজ ব্রিক্স, দীবা ব্রিকস,ঈদগাঁওয়ে আর এম এম ব্রিকস, আর কে সি ব্রিকস, এম কে ব্রিকস,চৌফলদন্ডীতে আর কে সি-২সহ সবকটি ইটভাটিতে দেদারছে পুড়ছে বনের কাঠ। কাঠভর্তি ড্যাম্পার ঈদগাঁও পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের সামনে দিয়ে ডিসি সড়ক হয়ে বঙ্কিম বাজার সংলগ্ন রাস্তা দিয়ে জালালাবাদে অবস্থিত ইটভাটিতে পৌঁছনোর সময় এ প্রতিবেদক বিষয়টি নিজে প্রত্যক্ষ করেন। তন্মধ্যে কয়েকটি ইটভাটার মালিক নিজেদের ব্রিকসগুলো ঝিঁকঝাক পদ্ধতির বলে দাবী করলেও ভিতরের চিত্র সম্পুর্ণ ভিন্ন। সরেজমিনে দেখা গেছে,তথাকথিত ঝিঁকঝাক ইটভাটায়ও ঝিঁকঝাকভাবেই রাতদিন পুড়ানো হচ্ছে রকমারি প্রজাতির বনজকাঠ। অন্যদিকে স,মিল মালিক সিন্ডিকেট স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন ও বনকর্তাদের মাসিক মাসোহারা দিয়ে ঈদগাঁও বাজারে দেদারছে চালিয়ে যাচ্ছে অবৈধ ব্যবসা। এছাড়া বঙ্কিম বাজার সংলগ্ন স’মিলের সামনে ডিসি সড়কের উপর কাঠের স্তুপ করে রাস্তা দখল করে যান ও জন চলাচলে বাঁধা সৃষ্টি করার অভিযোগ পার্শ্ববর্তী দোকানদার ও গাড়ি চালকদের। এ বিষয়ে মেহেরঘোনা রেঞ্জ অফিসারের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি এ বিষয়ে অবগত নন বলে জানান। অন্যদিকে কালিরছড়া বিট কর্মকর্তার সাথে যোগাযোগ করলে গাছ পাচারের বিষয়টি বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) ও রেঞ্জ অফিসার ভাল জানবেন বলে মোবাইলের সংযোগ কেটে দেন। কক্সবাজার পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক সরদার শরিফুল ইসলাম ফোন রিসিভ না করায় বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয় নি। সূত্রে জানা যায়, ঈদগাঁও মেহেরঘোনা রেঞ্জ কর্মকর্তা আতা এলাহী ও কালিরছড়া বিট অফিসে নতুন বিট অফিসার যোগদানের পর থেকে মেহেরঘোনা ও কালিরছড়া আওতাধীন বনভুমিতে ভাঙ্গা-গড়া,দখল-বেদখল বেড়েই চলেছে। তাই এলাকাবাসীর অভিমত, কাঠ পাচার কারী, ইটভাটার মালিক, অবৈধ স’মিল মালিকদের বিরুদ্ধে এখনই ব্যবস্থা না নিলে সাবাড় হয়ে যাবে সামাজিক বনায়ন, ধ্বংস হবে পরিবেশ ও দেখা দিবে আবহাওয়ার বিরুপ প্রতিক্রিয়া।

পাঠকের মতামত: