ঢাকা,সোমবার, ৭ অক্টোবর ২০২৪

আইপিডিসি-প্রথম আলো শিক্ষক সম্মাননা পেলেন চকরিয়ার ফয়েজ আহমেদ

আইপিডিসি-প্রথম আলো শিক্ষক সম্মাননা পেলেন চকরিয়ার ফয়েজ আহমেদ
বিশেষ প্রতিবেদক :: ‘আইপিডিসি’ প্রথম আলো প্রিয় শিক্ষক সম্মাননা ২০২০’ পেয়েছেন কাহারিয়াঘোনা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষক ফয়েজ আহমেদ। এই বছর সারা বাংলাদেশের ৯ জন শিক্ষককে এই সম্মাননা প্রদান করে দেশের প্রথম সারির দৈনিক প্রথম আলো ও আইপিডিসি।

রাজধানীর অভিজাত ঢাকার প্যান প্যাসিফিক হোটেলের কনফারেন্স হলে প্রাথমিক ও মাধ্যমিকের এই ৯ প্রিয় শিক্ষককে এই সম্মাননা দেওয়া হয়। অনুষ্ঠানে অতিথিরা কৃতি শিক্ষকদের পরিয়ে দেওয়া হয় উত্তরীয়, হাতে ক্রেস্ট ও সনদ তুলে দেওয়া হয়।

অনুষ্ঠানে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষানুরাগী, শিল্পী, সাহিত্যিকসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।

মানুষ গড়ার কারিগর ফয়েজ আহমেদ সারাটা জীবন সময়টুকু বিদ্যালয় এবং ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য ব্যয় করেছেন। ‘আইপিডিসি’ প্রথম আলো প্রিয় শিক্ষক সম্মাননা ২০২০’ জানানোর দ্বিতীয় আয়োজনে মূলত কোন প্রাক্তন শিক্ষার্থী সম্মাননাটির জন্য তার প্রিয় শিক্ষকের নাম প্রস্তাব করেন। মনোনীত শিক্ষকদের মধ্য থেকে যাচাই-বাছাই শেষে সারা বাংলাদেশের নয় জন শিক্ষককে এই সম্মাননা প্রদান করা হয়েছে।

কাহারিয়াঘোনা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষক ফয়েজ আহমেদ। প্রিয় শিক্ষক হিসেবে ফয়েজ আহমদকে মনোনীত করেন তাঁর সুযোগ্য ছাত্র বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. আমান উদ্দিন সুমন।

‘আইপিডিসি’ প্রথম আলো প্রিয় শিক্ষক সম্মাননা ২০২০’ পাওয়া কাহারিয়াঘোনা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষক ফয়েজ আহমদের সংক্ষিপ্ত জীবনী পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো।

ফয়েজ আহমেদ কক্সবাজারের চকরিয়া পৌরসভার বিনামারা এলাকায় ১৯৫৭ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৭৩সালে তিনি চকরিয়া সরকারী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিকে উর্ত্তীণ হন। ১৯৮০সালে শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় অংশ নিয়ে ১৯৮২সালের ১৮জানুয়ারি সহকারী শিক্ষক হিসেবে হাজিয়ান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যোগ দান করেন।

পরবর্তীতে তিনি চকরিয়া মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও মধ্য চকরিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দীর্ঘদিন শিক্ষকতা করেন। ১৯৮৯সালে চকরিয়া কাহারিয়াঘোনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যোগদান করেন। চাকুরীজীবনে সাত বছর শিক্ষকতা এসব স্কুলে সকাল-বিকাল দুই পূর্ব বিশেষ পাঠদান করে সুনাম অর্জন করেন মো. ফয়েজ আহমেদ।

এরপর তিনি নতুন ভাবে চালু করেন সন্ধ্যাকালীন কোর্স। পঞ্চম শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের জন্য মুলত এই ব্যবস্থা চালু করেছিলেন। অল্প সময়ের মধ্যে সাফল্যের মুখ দেখেন প্রাথমিক বিদ্যালয়টি। ১৯৯০সালে থেকে ১৯৯৫সাল পর্যন্ত স্কুলটি থেকে প্রতি বছর এক থেকে চারজন পর্যন্ত বৃত্তি পেতে থাকে। বড় সাফল্য আসে ১৯৯৬সালে পুরো উপজেলায় ১০৫টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে কাহারিয়াঘোনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে ৫জন ট্যালেন্টপুলে ও ৫জন সাধারণ গ্রেডে বৃত্তি লাভ করে।

ফয়েজ আহমেদ গণিত বিষয়ে উপজেলার মাষ্টার ট্রেইনার ছিলেন। মুলত তিনি অতিরিক্ত পাঠদানের জন্য শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে কোনো সম্মানি নিতেন না। এভাবে তিনি শিক্ষকতা জীবন পার করেন। ২০১১সাল পর্যন্ত তিনি এই বিশেষ পাঠদান ব্যবস্থা চালু রেখেছিলেন। পরে বয়সের কারণে পরবর্তী সময় আর চালিয়ে নিতে পারেননি। ২০১৭সালে ২ সেপ্টেম্বর অবসরে যান ফয়েজ আহমেদ। দীর্ঘ ৩৬বছর শিক্ষকজীবন তিনি হয়ে ওঠেন ছাত্রদের বটবৃক্ষের মতো শিক্ষক।

 

 

পাঠকের মতামত: